News
নতুন বিজনেসের জন্য ৮টি বিষয় অবশ্যি জানা প্রয়োজন

নতুন বিজনেসের জন্য ৮টি বিষয় অবশ্যি জানা প্রয়োজন

নতুন বিজনেসের ৮ টি বিষয় অবশ্যই জানা প্রয়োজনএকটি নতুন বিজনেসের বিভিন্ন স্টেইজ থাকে, আমার মতে, ৫০% স্টাবল পর্যায়ে যেতে একটি নতুন বিজনেসের মিনিমাম ৩ বছর সময় প্রয়োজন। এই ৩ বছরের মধ্যে আমার কাছে ৮ টি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, যা একটার সাথে একটা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।

১) ফ্রী মার্কেটিং স্ট্রেটেজিঃ এই টা সম্পূর্ন নির্ভর করে সেলস ডিপার্টমেন্টে যে কাজ করে তার উপর। একটি স্টার্টআপ বিজনেসের বাজেট অনেক কম থাকে। তাই ফ্রি মার্কেটিং স্ট্রেটেজিতে কাজ করতে পারলে অনেক ইনভেস্ট বেচে যায়, প্রজেক্ট প্রফিট, সার্ভিস প্রফিট, নিট প্রফিট বেড়ে যায়। যা দিয়ে নেক্সট আরও অনেক মাস কোম্পানি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। ক্লায়েন্টকে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে সার্ভিস বা প্রোডাক্ট অফার করা সম্ভব, যার সুবাধে যে ক্লাইন্ট একবার আমাদের সাথে কমিনিকেশন করে সার্ভিস বা পণ্য ক্রয় করার জন্য সে আর পিছুপা হয় না।

২) ম্যানেজমেন্টঃ যেকোনো কোম্পানিতে ম্যানেজমেন্ট একটি বড় ফেক্টর। সেলস ডিপার্টমেন্ট আপনাকে ১০ কোটি টাকা এনে দিলো কিন্তু এই ১০ কোটি কিভাবে ম্যানেজ করবেন, কোন খাতে খরচ করা উচিত, কোন খাতে খরচ করলে রিস্ক বেড়ে যাবে। কোম্পানির ব্যাকআপ কত রাখা উচিত। কোন জায়গায় কোম্পানি বড় ইনভেস্ট করলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।আবার, অফিশিয়াল টিম মেম্বারদের ম্যানেজ করা, তাদের সুবিধা অসুবিধা দেখা। দক্ষ টিম মেম্বার রিক্রুটমেন্ট করা। সব কিছুই যদি ম্যানেজমেন্ট ঠিক ভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এখানে সব ডিপার্টমেন্ট ভালো পারফরমেন্স করলেও কোম্পানির কোন উন্নতি হবে না। কারণ দিনশেষে দেখা যাবে কোম্পানির ফান্ড বিগ জিরো এবং নেক্সট ১-২ বছর স্ট্রাগল করার মতো কোম্পানির কাছে কোন ফান্ড ই খালি নেই। সব খরচ হয়ে গিয়েছে ভুল ডিসিশনের কারণে।

৩) সার্ভিস বা প্রোডাক্ট এর ফোকাস ঠিক রাখাঃ স্টার্টআপ কোম্পানির অন্য আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে জাম্প করা। যেমনঃ আপনি হয়তো ড্রাই ফুড নিয়ে বিজনেস করছেন, কিছু দিন পর দেখলেন অনেকেই ড্রেস চাচ্ছে, ড্রেস এর উপর ফোকাস করে সব অ্যাফোর্ড দেওয়া শুরু করলেন, আর সেই সাথে ১ বছর ধরে যে ড্রাই ফুডের উপর ফোকাস রেখে এত সময় অর্থ ব্যয় করলেন, সেই প্রোডাক্টকেই এখন অবজ্ঞা করা শুরু করলেন। কিন্তু দিন শেষে দেখা যাবে, দুটি প্রোডাক্টের কোনটিতে আর ভালো বিজনেস আসছে না।তাই স্টার্টআপ বিজনেসে ফোকাস ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর, কোন প্রডাক্ট সেল যখন স্টাবল পর্যায়ে যাবে তখন নতুন আরেকটি প্রোডাক্ট নিয়ে প্রমোশন শুরু করা যায় কিন্তু তা অবশ্যয় মেইন প্রোডাক্ট বা সিগনেচার প্রোডাক্টের এর ফোকাস নস্ট করে নয়।

৪) ঝুঁকি নিতে ভয় না পাওয়া : স্টার্টআপ কোম্পানির প্রথম ৩ বছরে এমন এমন সব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় যেন কোম্পানি এই মাসেই অফ হয়ে যাবে। তখন মনোবল ঠিক রেখে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ ঝুঁকি নিতে ভয় পেলে আপনার কোম্পানি কখনো স্টার্টআপ ট্যাগ থেকে বের হতে পারবে না। তবে জেনে-বুঝে এমন ঝুঁকি নেওয়া যাবে না যে, এই জায়গায় ইনভেস্ট করলে ৯৯% লস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই, ৫০ ৫০ সম্ভাবনাতে ঝুঁকি নেওয়া যায়।

৫) ব্যার্থ হতে পারে এমন মনোভাব নিয়ে কাজ করা : সব স্ট্রেটেজি ই যে সফল হবে তা কিন্তু নয়। তাই যেকোনো স্ট্রেটেজি/প্রজেক্টে ইনভেস্ট করতে হলে ব্যর্থ হতে পারে এমন মনোভাব আগে থেকেই তৈরী করে রাখতে হবে। ব্যার্থ হওয়ার পর কাউকে দোষারপ করা যাবে না। ভুল বের করে তা সলিউশন করতে হবে যাতে সেইম ভুল পরবর্তিকালে আর না হয়।

৬) দক্ষ টিম মেম্বার তৈরী করা : প্রতিটি দক্ষ টিম মেম্বার - এক একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার। অক্সিজেন সাপ্লাই কমে গেলে যেমন একটি মানুষের বেচে থাকার সম্ভাবনা ধীরে ধীরে কমে যায়, তেমনি একটি কোম্পানির দক্ষ টিম মেম্বার কমতে থাকলে ঐ কোম্পানির গ্রোথ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এবং একটা সময় পর কোম্পানি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তাই কোম্পানির অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে হবে। ১ জন দক্ষ টিম মেম্বার ১০ জন অদক্ষ টিম মেম্বার থেকে শতগুণ ভালো।

৭) কোয়ালিটি সার্ভিস /রিকোয়ারিং ক্লাইন্টঃ সেলস, ম্যানেজমেন্ট, দক্ষ টিম মেম্বার সব কিছুই আছে কিন্তু আপনার সার্ভিসের কোয়ালিটি এভারেজ পর্যায়ে বা অন্য কমপিটিটর থেকে অনেক খারাপ। তাহলে আপনার কোম্পানি সাময়িক সেল পেলেও, লং টাইম গ্রোথ এ যেয়ে আটকে যাবে। এবং আপনার রিকোয়ারিং ক্লাইন্ট এর সংখ্যা ০% এর মধ্যে চলে আসবে। যা একটি কোম্পানির গ্রোথকে আটকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

৮) ব্যাকআপ মানিঃ মনে করুন, আপনার কোম্পানি এমন এক পর্যায়ে চলে গেলো যে এই মাসে স্যালারি দেওয়ার টাকাও উঠে নি। তাহলে কি কোম্পানির শাটার অফ করে দিবেন ?? আর যদি পকেট থেকে ইনভেস্ট করেন তাহলে কয় মাস ?? কারণ, ধরুন আপনার কস্টিং মাসে প্রায় ৬ লাখ, তাহলে ??এখানেই আপনার ব্যাকআপ মানি কাজে লাগবে, কোম্পানি এমনভাবে ধীরে ধীরে গ্রোথ করবেন যাতে, আগামী ১ বছরও যদি আপনার কোন সেলস না থাকে তাহলে কোম্পানি স্মুথলি চালাতে পারেন।